তীব্র গরমে সুস্থ থাকার উপায়
তীব্র গরমে সুস্থ থাকার উপায় |
দিন দিন পৃথিবীর তাপমাত্রা যেন বেড়েই চলেছে। তাপমাত্রা কমার কোনো নামই নেই। একেক বছর থেকে এর পরের বছরের তাপমাত্রা বেড়েই যাচ্ছে। ফলে জনজীবন পরছে ভোগান্তির মধ্যে। বাংলাদেশে এমনিতেই বরাবরের মতো গরমটা একটু বেশিই পরে। কিন্তু কয়েকবছর ধরে গরমটা অনেক বেড়ে গিয়েছে। জনজীবন হয়ে যাচ্ছে বিপর্যস্ত। গরমে মারা যাচ্ছে অনেকেই। আর মারা যাওয়ার মূল কারণ হলো অতিরিক্ত গরমে হিটস্টোক করা। হিটস্টোকের ঝুঁকিতে রয়েছে শিশু, বয়স্ক ব্যক্তি, দিনমজুর, কৃষক ও যাদের হার্টের রোগ রয়েছে তারা। শুধু মাত্র যে মানুষরা হিটস্টোকের ঝুঁকিতে রয়েছে তা কিন্তু নয়। হিটস্টোকের ঝুকিতে রয়েছে পশুপাখিরাও। অতিরিক্ত গরমের কারণে বেড়ে যাচ্ছে ডায়রিয়াসহ ঠান্ডা, কাশি, চর্ম রোগ। গরমতো থাকবেই তবে এর মাঝেই আমাদেরকে সুস্থ থাকার জন্য চেষ্টা করতে হবে। চলুন তবে জেনে নিই গরমে সুস্থ থাকার উপায়গুলোঃ
১।গাঢ় কোনো রঙের কাপড় পরিধান থেকে বিরত থাকতে হবে। কারণ গাঢ় রঙের কাপড় সহজে ঘাম শুষে নিতে পারে না। তাই হালকা রঙের জামা পরতে হবে। ঢিলেঢালা ও নরম সুতি জামা কাপড় পরতে হবে।
২।অতিরিক্ত গরমের জন্য আমাদের শরীর পানিশুন্য হয়ে পড়ে। তাই আমাদের সবসময় স্যালাইন পানি খেতে হবে। তাছাড়াও পানি ও শরবত খেতে হবে।
৩।আমরা যতই বলি না কেন যে গরমের সময় বাহিরে যাওয়া থেকে বিরত থাকুন। তবে তা সম্ভব নয়। বাংলাদেশের মতো একটি স্বল্প উন্নত দেশে জীবিকার তাগিদে বাহিরে যেতেই হয়। তবে সকাল ১১ টা থেকে দুপুর ৩ টা পর্যন্ত যেহেতু বেশি রোদ থাকে তাই এই টাইমটাতে যথাসম্বভ বাহিরে না যাওয়ারই চেষ্টা করবেন। তাও যদি বেশি কাজের চাপ থাকে তাহলে একটানা রোদে কাজ করা যাবে না। একটু ছায়াতে বিশ্রাম নিতে হবে। আবার বেশি বেশি পানি খেতে হবে।
৪।আমাদের যেহেতু নিত্য প্রয়োজনে বাহিরে যেতেই হয় তাই বাহিরে যাওয়ার সময় ছাতা ও ক্যাপ ব্যবহার করতে হবে। ছায়াযুক্ত স্থানে বেশি বেশি থাকার চেষ্টা করতে হবে।
৫।বেশিরভাগ ক্ষেত্রে মেয়েরা ত্বকের যত্ন নিতে পছন্দ করে। তাই এই গরমে আপনার সুন্দর ত্বককে রোদের ক্ষতিকর প্রভাব থেকে বাঁচাতে সানস্ক্রিন বা সানব্লক ব্যবহার করুন।
৬।অনেকেই শরীর নিয়ন্ত্রণে রাখার জন্য দিনের বেলা নিয়মিত ব্যয়াম করে থাকে। কিন্তু ব্যয়াম দুপুর টাইমে না করে সকালে বা সন্ধ্যার দিকে করার চেষ্টা করতে হবে।
৭।অতিরিক্ত মশলাযুক্ত খাবার যেমনঃ তেলে ভাজা খাবার, বিরিয়ানি, কাচ্ছি, পোলাও, ফুচকা এগুলো খাওয়া থেকে বিরিত থাকতে হবে। ডিম ভাজি খেতে বাচ্চা অনেক পছন্দ করে। তাদেরকে ডিম ভাজি না দিয়ে ডিম সিদ্ধ করে দিবেন।
৮।গরমে দেখা যায় রাস্তার আশেপাশে অনেক শরবতের দোকান থাকে। সাবধান এগুলো খাওয়া যাবে না। কারণ এগুলোতে ময়লা থাকার সম্ভাবনা থাকে। ফলে আপনার উপকারতো হবেই না আপনি আরো অসুস্থ হয়ে যেতে পারেন।
৯।চা বা কফি গরমের সময় না খাওয়াই ভালো।
১০।আইসক্রিম খেতে ভালো লাগলেও এগুলো না খাওয়াই ভালো। কারণ এতে থাকে অনেক ধরণের রাসায়নিক পদার্থ।
১১।বাসায় তরকারী রান্না করলে খুবই কম তেল এবং কম মশলা দিয়ে রান্না করবেন।
১২।গরমে পেট ভালো রাখতে ঝুল ঝুল খাবার খাবেন। গরমে মুরগি বা গরুর মাংস খাওয়া থেকে বিরিত থাকুন। মুরগি খেলেও তা লাউ দিয়ে ঝুল রান্না করতে হবে। ফাইবার যুক্ত খাবার খেতে হবে বেশি বেশি। পেঁপে বা লাউ দিয়ে এর সাথে ডাল দিয়ে তরকারী রান্না করবেন।
১৩।গরমে ফল হিসেবে ডাব কিংবা তরমুজ খাবেন। তাহলে শরীরের তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণে থাকবে। আর ডাবের পানি শরীরের জন্য খুবই ভালো। লেবুর রস ও কাঁচা সালাদ খাবেন।
১৪।দিনে কয়েকবার গোসল করতে হবে। তাহলে শরীরের তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণে থাকবে। বেশি বেশি করে হাত-পা দিতে ধুতে হবে। শিশুদেরকে দুপুর টাইমে খেলাধুলা করতে দেওয়া যাবে না। যদি শরীরের বেশি কোনো সমস্যা হয় তাহলে দ্রুত ডাক্তারের শরণাপন্ন হন।
১৫।নিজ দায়িত্বে বাড়ির আশেপাশে গাছ লাগাতে হবে।