জাফলং
সিলেটের গোয়াইঘাট উপজেলায় অবস্থিত জাফলং একটি পর্যটন স্থল । সিলেট শহর থেকে ৬২ কিলোমিটার উওর -পূর্বে ও ভারতের মেঘালয় সীমান্ত ঘেষে খাঁসিয়া -জৈন্তা পাহাড়ের পাদদেশে জাফলং অবস্থিত । এখানে পাহাড় ও নদীর অপরূপ মিলবন্ধন এর ফলে এটি একটি পর্যটন স্থল হিসাবে পরিচিত । তাছাড়া ও এখানে রয়েছে বড় বড় পাথর ।এটি সর্বজন স্বীকৃত যে জাফলং পাথরের জন্য বিখ্যাত । আর এই পাথর গুলো এই এলাকার শ্রমজীবি মানুষের জীবিকার প্রধান উৎস । জাফলং বাংলাদেশের সিলেট সীমান্তবর্তী এলাকায় অবস্থিত । ভারতের ডাওকি অঞ্চল এর পাশেই অবস্থিত । আর ডাওকি অঞ্চলের পাহাড় থেকে সৃষ্ট নদী ডাওকি জাফলং দিয়ে বাংলাদেশে প্রবেশ করেছে । জাফলং মূলত পিয়াইন নদীর অববাহিকায় অবস্থিত । এই এলাকায় সাধারণ লোকের পাশাপশি অনেক উপজাতিরাও বসবাস করেন । তাদের মধ্যে রয়েছে বাল্লা , সংগ্রামপুঞ্জি ,নকশিয়াপুঞ্জি ,লামাপুঞ্জি ও প্রতাপপুর জুড়ে রয়েছে ৫ টি খাসিয়া পুঞ্জি । ২০০০ এর কাছাকাছি খাসিয়া উপজাতি বসবাস করেন এখানে ।
জাফলং এর ছবি- ১
জাফলং এর ছবি ১ |
জাফলং এর সৌন্দর্য
জাফলং এমন একটি জায়গা যেখানে দাঁডিয়ে আপনি বাংলাদেশ ও ভারতকে একসাথে দেখতে পারবেন । এখানে দাড়িয়ে ভারত সীমান্তের অভ্যন্তরে থাকা উঁচু উঁচু পাহাড় শ্রেনী দেখা যায় । তাছাড়াও এসব পাহাড় থেকে নেমে আসা ঝরনা পর্যটকদের আকৃষ্ট করবে । ডাওকি বন্দরের ঝুলন্ত সেতুও অনেকেই আকৃষ্ট করে ফেলবে । জাফলং অপরূপ সৌন্দর্যে মন্ডিত বলেই জাফলং কে প্রকৃতির কন্যা বলা হয় । তাছাড়াও এখানে আপনি দেখতে পাবেন পাথরের উপর দিয়ে বয়ে যাওয়া পিয়াইন নদীর স্বচ্ছ জলধারা । উঁচু উঁচু পাহাড়ের সাথে সাদা মেঘের খেলা । ঋতু বেদে এক এক রূপে সাজে সজ্জিত হয় জাফলং ।এখানে শীত ও বর্ষা মৌসুমে সৌন্দর্যের রূপ আলাদা ।বর্ষায় জাফলং এর রূপ লাবণ্য ভিন্ন মাত্রায় ফুটে উঠে ।প্রকৃতি তখন থাকে অনেক শান্ত । ধূলি আর ধূসর প্রকৃতি যেন প্রাণ ফিরে পাই এখানে বর্ষার সময় । বিশুদ্ধ অক্সিজেন এ সমৃদ্ধ থাকে চারপাশ । এইরকম বিশুদ্ধতা আর প্রকৃতির অনাবলি সৌন্দর্য্য যে কোন পর্যটকদেরই জাফলং প্রেমী করে তুলবে । তাছাড়াও অন্যন্য ঋতুতেও জাফলংকে সৌন্দর্য্য মন্ডিত ভিন্ন রূপে দেখা যায় ।যা পর্যটক দের সারাবছরই ভ্রমনের জন্য আগ্রহীকরে তুলে । বিউটি স্পট, পিকনিক স্পট, সৌন্দর্য্যের রানী হিসাবেও জাফলং পর্যটকদের কাছে অতিপরিচিত । এককথায় বলা যায় যে , ভ্রমণ পিয়াসুদের কাছে জাফলং এর অকর্ষণ আলাদা ।
জাফলং এর ইতিহাস
ঐতিহাসিকরা মনে করেন যে, একসময় হাজার হাজার বছর ধরে জাফলং ছিল খাসিয়া জৈন্তা-রাজার অধীনে থাকা একটি নির্জন বনভূমি। ১৯৫৪ সালে জমিদারি প্রথা বিলুপ্তির পরে এই জায়গা পতিতই পড়ে ছিল । পরে বিভিন্ন ব্যবসায়ীরা পাথের সন্ধানে নৌকানিয়ে এই জায়গায় আসতে থাকে ।আর পাথর ব্যবসায় প্রসার ঘটার সাথে সাথে এই এলাকায় জনবসিতিও গড়ে ওঠে ।
সিলেট থেকে জাফলং যাওয়ার উপায়
সিলেট থেকে আপনাকে অপরূপ সৌন্দর্যে মন্ডিত প্রকৃতির কণ্যা জাফলং যইতে হলে আপনাকে ৬০ কিলিমিটার পথ অতিক্রম করতে হবে । আর এই ৬০ কিলোমিটার পথ অতিক্রম করতে আপনার সময় লাগবে দেড় ঘন্টার বা ২ ঘন্টার মতো । সিএনজি ,লেগুনা ,বাস ,মাইক্রোবাস কিংবা নিজের গাড়ি বা মটর সাইকেল নিয়েও আপনি জাফলং আসতে পারবেন । প্রতিবছরই অনেক ইউটিউবারও তারা তাদের মোটর সাইকেল নিয়ে জাফলং এসে থাকেন জাফলং প্রাকৃতিক সৌর্ন্দর্য্য অনুদাবন করার জন্য এবং এর আলোকচিত্র প্রকাশ কারার জন্য । তাছাড়াও আপনি সিলেট শহরের কদমতলি ষ্টেশন থেক লোকাল বাস বা গেইট লক বাসে করে জাফলং আসতে পারবেন ।
জাফলং এর ছবি ২
জাফলং এর ছবি ২ |
জাফলং এর কাছাকাছি আরো কয়েকটি সুন্দর স্থান
* ডিবির হাওর - অথবা শাপলার বিল
*তামাবিল
*লালাখাল
*জৈন্তাপুর
*মায়াবী ঝর্ণা /সংগ্রামপুঞ্জি ঝর্ণা
*সংগ্রামপুঞ্জি চা এর বাগান