কক্সবাজার দর্শনীয় স্থান
অবস্থান
সমুদ্র সৈকত কক্সবাজার বাংলাদেশের অন্তরগত কক্সবাজার জেলায় অবস্থিত । ১৫০ কিলোমিটার বা ৯৩ মাইল দীর্ঘ এই সমুদ্র সৈকতকে বিশ্বের দীর্ঘতম সমুদ্র সৈকত হিসাবে ধরা হয় । সমুদ্র সৈকত কক্সবাজার বাংলাদেশের একটি জনপ্রিয় পর্যটন কেন্দ্র । বাংলাদেশের যাবতীয় পর্যটন কেন্দ্র গুলোর মধ্যে সমুদ্র সৈকত কক্সবাজার মূল আকার্ষণ । প্রতিনিয়ত অনেক পর্যটক এখানে অবকাশ যাপনের জন্য আসে ।
সমুদ্র সৈকত কক্সবাজারের প্রাকৃতিক সৌন্দর্য
সমুদ্র সৈকত কক্সবাজার প্রাকৃতিক অপরূপ সৌন্দর্যের এক লীলাভূমি । এখানে রয়েছে অনেক পাহাড় । এক কথায় বলা চলে এখানে সাগর আর পাহাড়ের রয়েছে অপূর্ব মিতালী । এখান কার সমাজিক-সাংস্কৃতি সমৃদ্ধ ঐতিহ্য ,বসবাস রত নানা ধর্মের অসাম্প্রদায়িক জীবন যাপন এবং পরিবেশে ও জীব বৈচিত্র্য সামারহ যেকোন পর্যটকদের আকৃষ্ট করে ফেলবে । এখানকার প্রকৃতিক পরিবেশ খুবই স্বাস্থ্যকর ও নৈসর্গিক । মেরিন ড্রাইভ ধরে ভ্রমণ করলে আপনার মনে হবে আপনি পৃথিবীর স্বর্গলোকে চলে এসেছেন । ৮০ কিলোমিটার এই সড়কটি পাহাড়ের সবুজ বুক চিরে চলে গেছে কক্সবাজার থেকে টেকনাফ । বিশ্বের দীর্ঘতম সমুদ্র সৈকত এর পাশ দিয়ে চলে গেছে বিশ্বের দীর্ঘতম মেরিন ড্রাইভ । এখানে রয়েছে প্রবল দ্বীপ সেন্টমার্টিন সহ প্রধান ৭ টি দ্বীপ । তাছাড়াও এখানে রয়েছে সাগর ও পাহাড়কে কেন্দ্র করে মানুষের তৈরি নানা আয়োজন । বিশেষ করে সাফিং ,প্যারাসাইলিং ,স্কুভা ডাইভিং এর মতো নানা আয়োজন । সমুদ্র সৈকত কক্সবাজারে বসে ঘুড়ি উড়ানোর মজায়ই আলাদা । এটা আপনার শৈশবকে মনে করিয়ে দিবে, কিছুক্ষণের জন্য আপনি হারিয়ে যাবেন আপনার ঘুড়ি উড়ানোর ছোটবেলায় । ছুটির দিনে পর্যটকের ঢল নামে এখানে । সমুদ্র সৈকত কক্সবাজারে পা রাখার সাথে সাথে আপনাকে বিমোহিত করবে সাগরের বড় বড় ঢেউ এর কলকল ধ্বনি । এক কথায় এই ধ্বনিতে আপনার শীতল মন আরো শীতল হয়ে যাবে । সাগর থেকে ভেসে আসা ঠান্ডা বাতাস আপনার সব ক্লন্তি দূর করে দেবে । এমনও পর্যটক আছেন যারা সাগরের গভীর প্রেমে পড়ে যায় । যার প্রমাণ মিলে ক্লান্ত শরীর নিয়ে হোটেলে না গিয়ে সাগর পাড়ে চলে আসে,শুধুমাত্র তার দৃষ্টির খিদা নিবারণ করার জন্য ।দিন লগ্নথেকে সূর্য বিদায় নেওয়ার পূর্বখনে সমুদ্র সৈকত কক্সবাজার সাজে আনেক রূপে । যা দেখতে সমুদ্র প্রেমী জনগন ভিড় জমায় সমুদ্র পাড়ে । রাতে দেখা যায় এর আরেক রূপ । চাদের আলোয় সাগর দেখার কি ফিলিং এটি বুঝানো সত্যিই কঠিন । মুহূর্তে আপনাকে রোমান্টিক করে দেবে । আর সাথে যদি থাকে আপনার পছন্দের মানুষটি তাহলে তো আর কোন কথায় নেই । হোক দিন বা রাত সমুদ্র সৈকত কক্সবাজার আপনার কাছে এক এক সময় ধরা দিবে এক এক রূপে ।
কক্সবাজারের দর্শনীয় স্থান
কলাতলী পয়েন্ট
কলাতলী পয়েন্ট কক্সবাজারের মূল অংশ । যা কক্সবাজার শহরের ডলফিন মোড়ের দিকে অবস্থিত । এর আশেপাশে অনেক হোটেল ও রেষ্টুরেন্ট আছে । এখানে থামে কক্সবাজার গামী সকল ধরণের বাস । আগে বাসগুলো সরাসরি কলাতলী পয়েন্টে এসে থামতো ।কিন্ত সরকারি নিষেধাজ্ঞা এর কারনে বাস গুলো এখন কলাতলীর কাছে ডলফিন মুড়ে এসে থামে ।
সুগন্ধা পয়েন্ট
কলাতলী পয়েন্ট এর উত্তর দিকে সুগন্ধা পয়েন্ট অবস্থিত । এখানকার সৌন্দর্য অনেক । এখানে অবস্থিত জনপ্রিয় বার্মিজ মার্কেট । এখানে সমুদ্রিক মাছ খাবার অনেক রেষ্টুরেন্ট ছিল ।কিন্তু কিছুদিন আগে সরকার কতৃক এগুলো উচ্ছেদ করা হয়েছে ।
লাবনী পয়েন্ট
সবচাইতে পরিচিত পয়েন্ট হলো এটি । পর্যটকরা মূলত এখানে বেশি সমবেত হয় । লাবনী পয়েন্ট সাফিং ,জগিং ,সাইকেলিং ও সাঁতার কাটার জন্য অনেক জনপ্রিয় ।
দরিয়ানগর সৈকত
দরীয়ানগর সৈকত হিমছড়ির পার্কের কাছাকাছি অবস্থিত । এই সৈকত দেখতে অনেক সুন্দর । এই সৈকত এর মধ্য দিয়ে জলপ্রবাত প্রবাহিত হয় ।
ইনানী সমুদ্র সৈকত
ইনানী সমুদ্র সৈকত অপরূপ সৌন্দর্যের এক প্রীতিমা । ইনানী সমুদ্র সৈকত কক্সবাজার শহর থেকে ৩৫ কিলোমিটার দক্ষিণে অবস্থিত ।কক্সবাজার শহর থেকে ইনানী সমুদ্র সৈকতে আসতে সময় লাগে মাত্র আধঘন্টা বা ৩০ মিনিট । অভাবনীয় সৌন্দর্যে ভরপুর এই সমুদ্র সৈকতটি। এই সৈকতে রয়েছে অনক প্রবাল পাথর । যেগুলোর রং সবুজ আর কালো । এর আয়তন প্রায় ১৮ কিলোমিটার বা ১১ মাইল । এটি কক্সবাজের উখিয়া উপজেলায় অবস্থিত ।
হিমছড়ি
কক্সবাজার থেকে ১৮ কিলোমিটার দক্ষিনে হিমছড়ি অবস্থিত । এখানকার প্রধান আকর্ষন ঝর্না আর ভঙ্গুর পাহাড় । কক্সবাজার থেকে হিমছড়ি যাওয়ার পথ যে কোন পর্যটকদের আকৃষ্ট করবে । কেননা এর বামদিকে রয়েছে ঘন সবুজে ঘেরা পাহাড় আর এর ডান দিকে রয়েছে প্রবাল সাগরের জলরাশি । হিমছড়ির ঝর্নাগুলোকে অনেক প্রাণবন্ত ও জীবন্ত মনে হয় বর্ষা কালে । এখানে পাহাড়ের চূড়ায় একটা রিসোর্ট আছে যেখান থেকে সাগরের অপরূপ সৌন্দর্য ভালবাবে পরিলক্ষিত করা যায় । ক্রিসমাস টি এখানকার উল্লেখযোগ্য একটি পানীয় । সম্প্রতিক সময়ে এখানে গড়ে উঠেছে কিছু পর্যটন কেন্দ্র ও পিকনিক স্পট ।